জানো কি? বহুদিন হলো
আমি অনেক কিছুই দেখি নি!
কী এক ভীষণ ব্যস্ততায় ছোটখাট
জানাগুলিকে আদৌ চিনি নি!
প্রতিদিন হেঁটে যাই যে পথে,
সেই পথের শেষেই যে একটা
লাল ডাকবাক্স আছে, মাথায় তার কালো টুপি।
জানো, খেয়ালই করি নি!
আরো ধর, বড় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে
একাকী ধূসর একটা টেলিফোন বুথ,
লাল তার ছাউনি…
জানো, আমার কভু সেখানে যাওয়াই হয় নি!
কিংবা পাশেই ঘুরে গেছে যে গলি,
কখনো ভাবি নি একটু পা বাড়িয়ে দেখি…
কিংবা মোড়ের মাথায় ফ্রাইড চিকেনের
সেই মেয়েটি
বড় বড় চোখ, নত মুখের ঈষৎ প্রশ্রয়ি হাসি…
এমন কিছু হয়তো নয়…
তবুও তাকে অজানা বিদ্বেষে বরাবর
এড়িয়েই চলেছি।
জানো, আমি অনেক কিছুই দেখেও দেখি নি।
ফাঁকা চোখে নিরন্তর পাশ কেটে গিয়েছি।
কী ভীষণ স্বার্থপরের মত আমি কেবল
কেবল বড় কিছুর পিছে পিছেই ছুটেছি!
কখনো নেই নি টেনে ক্ষুদ্রত্বের অদ্ভুত ঐশ্বর্য!
অথচ কে না জানে, এইসব আপাত
অবহেলার বস্তুই গড়ে সত্তার প্রকৃত স্বত্ব…
জগতে অভিজ্ঞতাই যে অস্তিত্ব!
তাই আজ বহুদিন পর হেঁটে গেলাম ঘুরপথে
অলি-গলি তস্য গলি আজ দেখেছে
বেভুল আমাকে।
গম্ভীর ডাকবাক্সের সামনে গিয়ে মাথা নেড়েছি।
বলেছি – ভালো আছো বন্ধু?
লাল বুথে সেঁধিয়ে গিয়ে নির্বিবাদে
কয়েন ফেলে অচেনায় ডায়াল করেছি।
আর আনোভার সামনে গিয়ে বহুদিন বাদে
চোখ ফিরিয়ে নেই নি!
হাসিমুখে বলেছি – কেমন আছো? ক’টা উইংস দেবে?
জানো, আজ বহুদিন পর যত ক্ষুদ্র উপেক্ষাগুলিকে
হেঁটে হেঁটে উদাসীন,
জানতে চেয়েছি।
কেউ জানে না, শুধু তৃপ্ত এ মন জানে
কী অদ্ভুত অপার আনন্দে আমি ভেসেছি!
উপেক্ষার ব্রাত্যজনকে বুকে তুলে
আমি ক’ফোটা মহার্ঘ্যের
অনুপম জল ফেলেছি!
আগে পড়িনি এই কবিতাটি। অসম্ভব সুন্দর লেখা।
এলোমেলো যখন হাঁটি তখনকার অনুভূতি! ধন্যবাদ তোমাকে।