আমি ঠিক জানি না কে আমার প্রতিবেশী – কী তার নাম?
প্রায় প্রতিদিনই দেখি কৃষ্ণাঙ্গ এক মহিলা, মধ্য বয়সী
সাথে বাচ্চা, এক গণ্ডা কাচ্চা।
কেবল হাই হ্যালোই বললাম, এতদিন
কিছুই তো জানা হলো না – একটু গভীরে, ঈষৎ বিস্তারে।
আজব, সেও কভু শুধালো না!
রাস্তায় হাঁটছি, মোটেও নই একা
সাথে চলছে অনেকেই, মুখে রাজ্যের ব্যস্ততা মাখা।
অনেকেই চেনা – হোক মুখের চেনায় চেনা
তবুও কেউ কাউকে বলি না, ভালো আছো?
কারুর গরজ নেই, ছুটছে সবাই
বাঁচো, নিজে বাঁচো, পারলে মাড়িয়ে বাঁচো
নতুবা সময় নেই, জলদি কাটো!
অথবা, ঝুলছি পাতাল রেলে – বাদুর ঝোলা।
সকালের ঠাস-বুনন ব্যস্ততা,
এই যে অনন্যা, কতক্ষণ হয়ে গেলো দাঁড়িয়ে আছি খুব কাছাকাছি…
না, ভুল বুঝবেন না। চাইনি তার কাছে অশোভন কিছু
সাধ্যের অতীত, অযাচ্য অতিরিক্ত!
শুধু একবার হয়তো চেয়ে দেখতে পারতো,
হাতে ধরা পেপারব্যাকটা হতে পারতো ব্রাত্য!
কিন্তু সে চাইলো না; মুখে ধরে আছে হিসেবী নাগরিক দূরত্ব
চলছে এমনি হাল ফ্যাশনের সমাজ – আহ, জবরদস্ত কায়দাদুরস্ত!
রক্তমাংসের জলজ্যান্ত মানুষ আমি, নিদারুণ উপেক্ষায় ভাবি –
সেই জড় বইটি কি আমার থেকেও দামী?
আমি ঠিক জানি না আমি এমন কেন? কিংবা তোমরা এমন কেন?
কিসের নেশায় এই ছুটে চলা, নাভিশ্বাসে নির্মমতার পিছু পিছু।
কেন, কেন কেউ কাউকেই চিনি না, জানি না?
জানিনা আমি এমন করে চাই কেন?
আমি যে জানতে চাই আমার প্রতিবেশীটিকে, জানতে চাই তার নাম।
কিংবা মুখচেনা পথচারীকে হাসিমুখে বলতে চাই – কেমন আছো?
আর ঐ সুদর্শনাকে বলতে চাই – এই যে শুনছো?
ছুঁড়ে ফেলে মেকি উপেক্ষা এসো দু’দণ্ড কথা কই।
আমি চাই না মানুষের কোটি কোটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ
স্বার্থান্ধ জলে মানবতার ক্ষয়িষ্ণু অন্তরীপ।
জীবন এই এতটুকু,
এসো না সব ভুলে মিলনের গান গাই,
এসো নিরবিচ্ছন্নতার স্বপ্ন সাজাই।
প্রথম প্রকাশঃ প্রজন্ম ফোরাম (অক্টোবর ২০১১)
আমরা যে যান্ত্রিক প্রাণহীন সমাজ ব্যবস্থার ফসল কবি…
একদম সঠিক বলেছেন। সবই যান্ত্রিক হয়ে গেছে। আমরা একেকটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত; কেউ কাউকে চিনি না – জানবার প্রয়োজনও বোধ করি না! শুধু নিজে বাঁচো। এ কি বাঁচা?
এটাই হয়তো আজকের জন্য আমার জন্য আমার মত করে বাঁচা৷ আর এই প্রত্যহিক বাঁচার মধ্যেই দেখেছি আত্মীয়ের অনাত্মীয়ের মত উদাসীনতা আবার সম্পূর্ণ অচেনা কারোর আন্তরিক সহচার্য, কিছু মামুষের আন্তরিক ভালোবাসা ৷ এই চাওয়া পাওয়া নিয়েই আমাদের বেঁচে থাকা…… যান্ত্রিকতা সহ দিনযাপন ৷ এত প্রতিকূলতার মধ্যেও পুরো পৃথিবীটা কিন্তু ধূসর হয়ে যায়নি, তাই আজও বাঁচতে ইচ্ছে করে…..মানুষ দেখার মত আনন্দের কিছু নেই…..৷
বাসায় কি কেউ আছেন!!! প্রশ্নের উত্তর দিতে এসেছিলুম কেউ দরজাই খুলল না …
কে গো আপনি? 😉 হে হে হে আপনার নামটা আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে।