প্রেমময় জলের স্মৃতিকাতরতা

প্রমত্তা কিছু নদী মাঝে মাঝেই বিবসনা হয়ে যায়!
তাদের উত্তুঙ্গ জলবতী বুকে আমন্ত্রণের হাতছানিরা
আলতো ভাসে কামজ সকৌতুকে।
সাধ্য কী মরমর আকাশের? মুদে রাখে দু’নয়ন
জপে মালা নিষ্ফল নীতিকথার, উন্মন উদাসীনতায়?

নদীরা সব আশ্চর্য! কেমন করে জানি বুঝে ফেলে
চাপা তৃষ্ণা, কাঙ্খিত প্লাবনের রুদ্ধ আদিমতা।
তখন কোনো কোনো নদী বড্ড খেলুড়ে হয়ে যায়,
মুক্ত বহমান তরলের মত বয় সেইসব অনুপম দক্ষতা!
কেউ জানে না সত্যিকারের কী থাকে সেই রমণীয় ক্রীড়ায়?
শুধু ব্রাত্য যোগীর আর্ত প্রাণ আসে যায়!

তবুও সব দেখে শুনে আনমনে উথলে হাসি
উদাসীন প্রাণে – যেনো স্রেফ অপাপবিদ্ধ!
জলবতীরা কেলি ভুলে অবাক চেয়ে রয়!
কী করে জানবে ওরা? যোগীর বুকে যে শুধুই
একখানি অভিমানিনী জলের উন্নদ্ধ স্মৃতিকাতরতা!
যে একদা মদির নেশায় শুধিয়েছিলো,
– যোগী! নামবে আমার জলে?

সেই যে ক’বে ভিজেছিলো চরণ দু’খানা
সেই থেকে এখনো তেমনি অবুঝ প্রেমার্দ্রই আছে!!

প্রথম প্রকাশঃ প্রজন্ম ফোরাম (অক্টোবর ২০১১)

উপহাস!

ভালোবাসা বড় নির্মায়িক ঘাতক
চেয়ে চেয়ে রক্ত ঝরায় কত নেপথ্যের চাতক!
ভালোবাসা তবু ক্রুর হাসে!
প্রাপ্তির পাতায় জোটে মোটে অলীকের পাওনা।
তবুও ভালোবাসা বলে, ‘বুদ্ধু, তেমন করে তো চাইলি না!’

হায় ভালোবাসা! কত অস্থির রাতের অবিরাম পায়ে চলা
মেটে না তৃষ্ণা – অবুঝ মন শত কৌশলী প্রবোধেও মানে না!
বারে বারে খুঁজে ফেরে অধরা।
কারো নিঠুর কৌতুকে কিংবা মিছে আবেদনের চাপা কুহকে
গড়িয়ে চলে কোনো প্রেমাহতের
ব্যথিত নিশি যাপন – পৌনঃপুনিক বাঁচা-মরা।
তবু ভালোবাসা বলে, ‘বুদ্ধু, তেমন করে আর মরলি কই!’

ভালোবাসা বড় কুটিল নিপীড়ক –
যুগান্তরের প্রাচীন মাদক।
কোনো কোনো হৃদয়-ঝড় স্রেফ দামামা বিহীন..
নিঃশব্দে ভাঙ্গে যত অক্ষম দলিত পাঁজর।
তবুও ভালোবাসা উপহাসে, ‘বুদ্ধু, তেমন জ্বালা আর সইলি কই!’

প্রথম প্রকাশঃ প্রজন্ম ফোরাম ( জুলাই ২০১২)